সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হয়েছে। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাজলদান করেছেন রামলালার। যার সাক্ষী হয়েছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। ৫১ ইঞ্চি উচ্চতার কৃষ্ণশিলা দিয়ে নির্মিত রামলালা ছিল আপাদমস্তক গয়নায় মোড়া। রামলালার মাথায় শোভা পাচ্ছিল স্বর্ণের মুকুট। বিশেষভাবে সবার নজর কাড়ে এই মুকুটটি।

ভক্তদের মনে প্রশ্ন জেগেছে রামলালার মুকুটটি দান করলেন কে? ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, গুজরাতের এক শিল্পপতি দিয়েছেন এই মুকুট। যার নামের প্রথমে আছে মুকেশ। তবে তিনি মুকেশ আম্বানি নন।

রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র দিন স্বর্ণের মুকুট দান করেন মুকেশ পটেল। গুজরাতের সুরাটে হিরের ব্যবসা রয়েছে তিনি। এই মুকুটের ওজন ছিল ৬ কিলোগ্রাম, যা তৈরিতে খরচ হয়েছে ১১ কোটি রুপি। তবে শুধুমাত্র স্বর্ণ নয়, রামলালার মুকুটে ব্যবহার করা হয়েছে হিরে, পান্না, রুবিসহ নানা বহুমূল্য রত্ন।

রামলালার মুকুটের ডান দিক মুক্তোর ছোট মালার মতো সাজানো রয়েছে। প্রায় ৪ কেজি ওজনের স্বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে মুকুট নির্মাণে। ৬ কেজি ওজনের মুকুটে বাকি দুই কিলোগ্রাম আছে হিরে, চুনি, পান্নাসহ অন্যান্য সব রত্ন। শুধু স্বর্ণের মুকুট নয়, পাশাপাশি রামলালার জন্য গয়নাও দান করেছেন মুকেশ। এর আগে রামলালার সোনার মুকুট যাতে নিখুঁতভাবে তৈরি হয়, সে কারণে ৫ জানুয়ারি অযোধ্যায় তার সংস্থার পক্ষ থেকে দুইজন কর্মীকেও পাঠিয়েছিলেন মুকেশ।

রামমন্দির উদ্বোধনের দিন স্ত্রী এবং পুত্রকে নিয়ে অযোধ্যায় গিয়েছিলেন মুকেশ। এদিন তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্যদের হাতে স্বর্ণের মুকুট তুলে দেন তিনি। মুকুটের সঙ্গে মানানসই কুণ্ডল (দুল) রয়েছে রামলালার কানে। স্বর্ণের তৈরি দুলেও বসানো রয়েছে হিরে, চুনি, পান্না। ময়ূরের নকশা ফোটানো হয়েছে তাতে।

প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন রামলালার পরনে ছিল হলুদ রঙের বেনারসি ধুতি। গায়ে ছিল লাল পট্টবস্ত্র। এই পট্টবস্ত্রে সোনার জরি দিয়ে কারুকাজ করা হয়েছে। শঙ্খ, চক্র, পদ্ম এবং ময়ূর ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পট্টবস্ত্রে। যা তৈরি করেছে দিল্লির একটি সংস্থা। এর গলায় রয়েছে অর্ধচন্দ্রাকৃতি কণ্ঠহার। ফুলের নকশা করা হয়েছে তাতে। মধ্যখানে সূর্য আর অসংখ্য হিরে, চুনি, পান্না খোদাই করা এই অলঙ্কারের নিচে ঝুলছে পান্না।

আরও পড়ুন: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মুসলিম’ শব্দ নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশ

গণমাধ্যমটি বলছে, রামলালা শিশু, তাই তার সামনে রাখা রয়েছে রুপোর খেলনা। যেমন: রুপোর ঝুনঝুনি, হাতি, উট, ঘোড়া, গাড়ি, লাট্টু। পেছনে রয়েছে স্বর্ণের ছাতা। এর গায়ে কী কী গয়না পরানো হবে, তা নিয়ে চলেছিল গবেষণা। বাল্মিকীর রামায়ণ, অধ্যাত্ম রামায়ণ, রামচরিত মানস, আলভান্দর স্তোত্র পড়ে গয়নার নকশার পরিকল্পনা করা হয়। গবেষণা করে গয়নার নকশা তৈরি করেছেন যতীন্দ্র মিশ্র।