এখনও পর্যন্ত জনপ্রিয় বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে সোনাকেই গণ্য করা হয়। বিপদের দিনে সহায় হয়ে দাঁড়ায় এই স্ত্রী-ধন। কিন্তু মুশকিল হল, অনেকেই আসল আর নকল সোনার ফারাক করতে পারেন না। এমনিতে বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, ৪১.৭ শতাংশ অথবা ১০ ক্যারাটের কম সোনা নকল হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে প্রথম দর্শনে কিন্তু নকল সোনাও ঘোল খাইয়ে দিতে পারে। ফলে প্রতারকরা এভাবে প্রতারণার জাল পাততে পারে।

তাই সতর্ক হওয়া আবশ্যক। কীভাবে? সোনা চেনার কিছু ঘরোয়া উপায়ও রয়েছে। দেখে নেওয়া যাক সেই উপায়গুলি।

ম্যাগনেট টেস্ট বা চৌম্বকীয় পরীক্ষা : আসলে আসল বা খাঁটি সোনা কিন্তু ম্যাগনেটিক নয়। তবে অন্য বেশির ভাগ ধাতু কিন্তু ম্যাগনেটিক। তাই শক্তিশালী চুম্বক ঘরে থাকলে অনায়াসে খাঁটি সোনা পরীক্ষা করা যাবে। সোনার টুকরোটির সামনে রেখে দেখতে হবে যে, সেটি চুম্বকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে কি না। ফলে এই পরীক্ষাটি বেশ সহজও। আর সবথেকে বড় কথা হল, সোনায় কিন্তু মরচে পড়ে না। যদি মরচে দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে যে, সেটা খাঁটি সোনা নয়।

হলমার্ক : সোনা আসল বা খাঁটি কি না, সেটা নির্ধারণ করার জন্য তাতে হলমার্ক করা হয়। তাই হলমার্ক সার্টিফিকেশনটা দেখে নিতে হবে। সোনার গয়না এবং মুদ্রার সার্টিফিকেশনের জন্য ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) তৈরি করেছে ভারত সরকার। সোনার পিছনে লুকোনো থাকে এই হলমার্ক। আসলে বিআইএস সোনার বিশুদ্ধতা এবং সূক্ষ্মতার নির্ধারণ করে।

ফ্লোট টেস্ট বা ভাসমান পরীক্ষা : সোনা হল কঠিন এবং ভারি ধাতু। বিশুদ্ধতা নির্ধারণ করার জন্য এই ধাতুর ঘনত্ব এবং তা কতটা ভারি সেটা পরীক্ষা করতে হবে। এর জন্য একটি বালতিতে জল ভরে সোনার গয়না তার মধ্যে ফেলতে হবে। খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি হলে তা জলে ডুবে যাবে।

অ্যাসিড পরীক্ষা : খাঁটি সোনা কখনওই নাইট্রিক অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না। তবে তামা বা কপার, জিঙ্ক, স্টার্লিং সিলভার-সহ নানা সঙ্কর ধাতুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে। তবে সোনার বিশুদ্ধতার এই পরীক্ষা করার সময় গ্লাভস এবং মাস্ক পরা আবশ্যক। আর এমন ঘরে তা করতে হবে, যেখানে ভাল আলো-বাতাস খেলে। গয়নার পৃষ্ঠতল হালকা করে আঁচড়ে নিয়ে একটি ড্রপার ব্যবহার করে স্বল্প পরিমাণ নাইট্রিক অ্যাসিড যোগ করতে হবে। ওই পৃষ্ঠতল সবুজ রঙ ধারণ করলে বুঝতে হবে যে, তা সোনার জল করা। আর খাঁটি হলে তা থেকে দুধের মতো পদার্থ নির্গত হবে।

ভিনিগার পরীক্ষা : সব রান্নাঘরেই মিলবে এই উপকরণ। সোনার টুকরোয় কয়েক ফোঁটা ভিনিগার ফেলতে হবে। যদি ধাতুর রঙ বদলে যায়, তাহলে বুঝতে হবে যে, খাঁটি সোনা নয়।