দুবাই প্রবাসীর সঙ্গে প্রতরণার অভিযোগ প্রেমিকার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে
চট্টগ্রামের ছেলে তহিদুল ইসলাম রাসেল। প্রবাসে থাকা অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় সীমা আক্তার শান্তা নামের এক নারীর সাথে। পরিচয় গড়ায় বিয়ে পর্যন্ত। ভুক্তভোগী তহিদুল ইসলাম বিয়ের কিছুদিন পরেই বুঝতে পারেন এটি বিয়ে নয় বরং এটি একটি প্রতারণা।
দুবাইতে প্রবাসী তহিদ ভালো পোষ্টে চাকরি করতেন।মেয়ের বাবা দুলাল ও মা নাজমা বেগম তাকে ভালো চাকরি রেখে দেশে আসতে বাধ্য করেন। দিনের পর দিন তাকে মুঠোফোনে অতিষ্ঠ করে দেশে আসতে বাধ্য করেন।
চার মাস তাদের মধ্যে সম্পর্ক চলে। নিতুর বাবা-মা মিলে ওই প্রবাসী যুবকের কাছ থেকে জায়গা-জমির সমস্যার কথা বলে ছলনা করে প্রবাসী যুবক তহিদের থেকে প্রথমে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী তহিদ জানান, ওই প্রতারক মা-বাবা এবং তার মেয়ের পাল্লায় পড়ে তার কাছে টাকা না থাকা সত্ত্বেও অন্যের কাছ থেকে এই ১০ লক্ষ টাকা ঋণ করে পাঠান তাদের জন্য। পরে আবার জায়গা জমির সমস্যা কথা বলে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ লক্ষ টাকা পাঠান। পরে আবারও ছলনাময়ী প্রতারক মেয়ে শান্তা শপিং ও অন্যান্য কেনাকাটার জন্য চার লক্ষ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক বাবা-মা এবং তার মেয়ে শান্তা। পুরো বিষয়টি আমার পরিবারের কেউ জানতো না । এক পর্যায়ে আমার বাবা-মা শান্তাকে দেখতে চাইলে আমি আমার ছোট ভাইকে পাঠাই। কিন্তু আমার ছোট ভাই শান্তাকে দেখে হবু ভাবি হিসাবে পছন্দ হয়নি বলে আমার বাবা মার কাছে জানায়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তার বাবা-মা আমাকে চাপ দিতে থাকে আমার পরিবারকে ম্যানেজ করার জন্য। এক পর্যায়ে ওই প্রতারক বাবা-মা আমার পরিবারকে বারংবার ফোন দেয়। এক পর্যায়ে আমার বাবা মাকে বেয়াই-বেয়াইন বলে সম্বোধন করতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে আমার বাবা-মাকে তাদের মেয়েকে ছেলের বউ হিসেবে বিয়ে করাতে বাধ্য করে।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের সময় মেয়ে পক্ষ ভিডিও কলে আমার পরিবারের কাছে কাবিননামা বাবদ ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। পরে আমার পরিবার দশ লক্ষ টাকায় বিষয়টির মীমাংসা করেন। মূলত এই বিয়ের নাটকটি ছিল ওই প্রতারক চক্রের পূর্বপরিকল্পিত একটি ছক।
পরে সীমা আক্তার শান্তা বেশ কিছু গয়নার ছবি তুলে বিদেশে আমার কাছে পাঠায়। গয়নাগুলোর ওজন প্রায় ৮ ভরি ছিল। তখন আমি দুবাই থেকে গয়না গুলো কিনে নিয়ে আসি এবং বাসর রাতে তাকে উপহার হিসেবে দিই। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই আমাকে ডিভোর্সের ভয় দেখিয়ে আরও অর্থ আত্মসাৎ করতে শান্তা। এ পর্যন্ত বিভিন্ন অজুহাতে ওই প্রতারক মা ,বাবা ও মেয়ে শান্তা আমার কাছ থেকে মোট ২৭ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমাকে সর্বস্বান্ত করে ।
গত ১/৪/২৪ ইং তারিখে সিমা আক্তার শান্তার সাথে আরেকবারেকভাবে চট্টগ্রামের একটি রেস্টুরেন্টে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। চট্টগ্রামে শান্তাদের বাড়ির ফ্লাটে আমার ফুলশয্যার রাত হয়। আমাদের বাড়ি থেকে অনুষ্ঠানের ওই রেস্টুরেন্টটি দূরত্ব একটু বেশি থাকায়
আমার বাবা-মা ওই হোটেলে এই রাত্রে যাপন করে। পরদিন সন্ধ্যার দিকে শান্তার বাবা-মা আমার বাবা মাকে বলে বেয়াই আমাদের বাড়িতে আজকে ইফতার করতে আসবেন। কথা অনুযায়ী আবার বাবা-মা পরদিন অর্থাৎ এপ্রিল মাসের ২ তারিখে শান্তদের বাসায় ইফতারের জন্য যায়। তখন আমি এই শান্তদের শোয়ার কক্ষেই ছিলাম। এরপর শুরু হয় প্রতারক চক্রদের কুটকৌশল। তারা ইফতারের সময় আবার বাবা মাকে কেবল এক গ্লাস পানি দেয়। এরপর হঠাৎ শান্তার মা নাজমা বেগম তার এক আত্মীয়কে নিয়ে হঠাৎ আমার মা বাবাকে বলে আপনাদের জিনিসপত্র নিয়ে ছেলে সহ আমার বাসা থেকে চলে যান । অনেক ঝগড়াঝাটি করে রাতে দুইটার দিকে আমাদেরকে শান্তদের বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়।
এর পরের দিন শান্তার বাবা তার কয়েক আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে আমাদের গ্রামে গিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলে আমার নামে মেয়েকে আমি তালাক দিয়ে দিব ওই ছেলের কাছ থেকে। তখন আমার এলাকাবাসী শান্তার বাবা দুলাল মিয়াকে প্রশ্ন করে আপনি পাঁচ ছয় বার এলাকায় এসে ছেলে সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েই তো বিয়ে-শাদীর ব্যবস্থা করেছেন হঠাৎ বিয়ের একদিন পরে এসব কি নাটক করতেছেন। এলাকাবাসীর কথার চাপে পড়ে শান্তার বাবা আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
প্রবাস ফেরত যুবক তহিদ কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলেন বিয়ের অনুষ্ঠানের যাতায়াতের খরচ এবং রেস্টুরেন্টের খরচ বাবদ পুরো টাকাটাই আমি পরিশোধ করি। আমার এখন পথে বসার মত অবস্থা। ওই প্রতারক বাটপারদের ফাঁদে পড়ে আমি সর্বশান্ত হয়ে গেছি। আমি রাষ্ট্রের কাছে এ বিষয়ে সুবিচার প্রার্থনা করি। এবং এই সাথে আমি এটাও চাই ওই প্রতারক বাটপার মা মেয়ের চক্ররা যেন ভবিষ্যতে আর কোন যুবককে তাদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সর্বস্বান্ত না করতে পারে। আমার বিয়ের পরের দিন আমার বৃদ্ধ বাবা মাকে তাদের বাসায় ডেকে নিয়ে অপমান করে বের করে দেওয়ার বিষয়টিও তাদের একটি প্রতারণার অংশ ছিল। আমি এই প্রতারক চক্র পরিবারকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের মাধ্যমে তাদের প্রতারক চক্রের মুখোশ খুলে দিতে চাই।