দারুণ বোলিংয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখলেন মুহাম্মাদ জাওয়াদউল্লাহ ও আয়ান আফজাল খান। রান তাড়ায় মুহাম্মাদ ওয়াসিম ও আসিফ খান উপহার দিলেন ঝড়ো ইনিংস। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে স্মরণীয় এক জয়ের উল্লাসে মাতল সংযুক্ত আরব আমিরাত।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শনিবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউ জিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল আমিরাত। ১৪২ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে যায় তারা ২৬ বল বাকি থাকতেই।

সীমিত ওভারের দুই সংস্করণ মিলিয়ে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচে আমিরাতের প্রথম জয় এটি।

এই সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার মুখোমুখি হয় দুই দল। ওই ম্যাচে সম্ভাবনা জাগিয়েও ব্যাটিং ধসে ১৯ রানে হারের একদিন পরই ইতিহাস গড়া জয়ের স্বাদ পেল আমিরাত।

ওয়ানডেতে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে একবারই, ১৯৯৬ বিশ্বকাপের ওই ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতেছিল নিউ জিল্যান্ড।

টেস্ট না খেলা দলগুলির বিপক্ষে সব সংস্করণ মিলিয়ে ৩৯ ম্যাচে এই প্রথম হারের তেতো স্বাদ পেল কিউইরা। দুবাইয়ে আট টি-টোয়েন্টি খেলে প্রথমবার জিতল আমিরাত।

বোলিংয়ে দলটির জয়ের নায়কদের একজন আয়ান খান। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরাও ১৭ বছর বয়সী এই বাঁহাতি স্পিনার।

সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ১৬ রানে ২ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার জাওয়াদউল্লাহ।

প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে ফেরার পর এবার ২৯ বলে ৩টি ছক্কা ও ৪টি চারে ৫৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন অধিনায়ক ওয়াসিম। ২৯ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৪৮ রানের ইনিংসে জয় নিয়ে ফেরেন আসিফ।

নিউ জিল্যান্ড ব্যাটিংয়ে নামে টস হেরে। প্রথম ম্যাচে ঝড়ো ফিফটি করা টিম সাইফার্টকে এবার ৭ রানেই ফিরিয়ে আমিরাতকে প্রথম সাফল্য এনে দেন জাওয়াদউল্লাহ।

ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারে ৯ রান দেওয়া আয়ান পরের ওভারে পরপর দুই বলে বোল্ড করে দেন মিচেল স্যান্টনার ও ড্যান ক্লিভারকে। তার পরের ওভারে স্টাম্পড হন চ্যাড বাওয়েস।

কোল ম্যাকনকিও টিকতে পরেননি বেশিক্ষণ। ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারানো নিউ জিল্যান্ড লড়াইয়ের পুঁজি পায় মূলত মার্ক চাপম্যানের ৪৬ বলে ৬৩ রানের সুবাদে। ৩টি করে ছক্কা ও চারে গড়া তার ইনিংসটি।

দুই অঙ্কে যেতে পারেন আর কেবল বাওয়েস ও জেমস নিশাম। দুজনই করেন ২১ রান।

প্রথম ম্যাচে অভিষেকে ফিফটি করা আরিয়ানস শার্মাকে এবার শূন্য রানেই হারায় আমিরাত। তবে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন ওয়াসিম ও ভ্রিতিয়া আরাভিন্দ।

আরাভিন্দ বিদায় নেন ২১ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ২৫ রান করে। তার সঙ্গে ৩২ বলে ৪০ রানের জুটির পর আসিফের সঙ্গে ৩১ বলে ৫৬ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন ওয়াসিম।

২৭ বলে ফিফটির পরপর ওয়াসিমকে থামান স্যান্টনার। বাসিল হামিদকে নিয়ে বাকিটা সারেন আসিফ। টিম সাউদিকে টানা দুটি বাউন্ডারিতে দলের জয়ে তুলির শেষ আঁচরটাও দেন তিনি।

একই মাঠে রোববার শেষ ম্যাচে বিরল এক সিরিজ জয়ের হাতছানি আমিরাতের সামনে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৪২/৮ (বাওয়েস ২১, সাইফার্ট ৭, স্যান্টনার ১, ক্লিভার ০, চাপম্যান ৬৩, ম্যাকনকি ৯, নিশাম ২১, রবীন্দ্র ২, জেমিসন ৮*, সাউদি ৪*; জাওয়াদউল্লাহ ৪-০-১৬-২, আয়ান ৪-০-২০-৩, নাসের ৩-০-২৫-১, জহুর ৪-০-৩৫-১, ফারাজউদ্দিন ৪-০-৩৭-১, বাসিল ১-০-৭-০)

সংযুক্ত আরব আমিরাত: ১৫.৪ ওভারে ১৪৪/৩ (আরিয়ানস ০, ওয়াসিম ৫৫, আরাভিন্দ ২৫, আসিফ ৪৮*, বাসিল ১২*; সাউদি ৩.৪-০-৩২-১, লিস্টার ২-০-১৭-০, স্যান্টনার ৩-০-২৬-১, জেমিসন ৩-০-৩০-১, ম্যাকনকি ১-০-১৪-০, নিশাম ৩-০-২৪-০)

ফল: সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা

ম্যান অব দা ম্যাচ: আয়ান আফজাল খান