২৯ বছর বয়সী সৌদি নারী মানাহেল আল-ওতাইবি একজন ফিটনেস প্রশিক্ষক। তিনি তার পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরিধান ও সৌদি নারীদের বাধ্যতামূলক পুরুষ অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা অবসানের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন। এজন্যে গত জানুয়ারি মাসে তাকে ১১ বছরের জেল দেওয়া হয়।

মানাহেল আল-ওতাইবিকে সাজা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের অনুরোধে সৌদি আরবের আনুষ্ঠানিক জবাবে তার মামলার বিবরণ উঠে এসেছে। লন্ডন ভিত্তিক অ্যামনেস্টি এক বিবৃতিতে এতথ্য জানিয়েছে।

অ্যামনেস্টি এবং লন্ডন-ভিত্তিক আল-কিউস্ট, একটি সৌদি গ্রুপ যা সৌদি আরবে মানবাধিকারের উপর নজর রাখে, এ দুটি সংস্থা বলছে যে আল-ওতাইবিকে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাশট্যাগ ‘পুরুষ অভিভাবকত্ব বাতিল করুন’ পোস্ট করার জন্য অভিযুক্ত করা ছাড়াও তার পরিধানের পোশাককে অশালীন পোশাক বলে অভিহিত করা হয়। সৌদি চাদর বা আবায়া ছাড়া কেনাকাটা করার জন্যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে আল-ওতাইবিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে সন্ত্রাসী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ার জন্যে।

অ্যামনেস্টি বলেছে যে আল-ওতাইবির বোন, ফওজিয়া একই ধরনের অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছিল কিন্তু ২০২২ সালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার পর সৌদি [৮আরব থেকে তিনি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

সৌদি আরবের উপর অ্যামনেস্টির তদারককারি বিসান ফাকিহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, আল-ওতাইবিকে শাস্তি দিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাদের বহুল আলোচিত নারী অধিকার সংস্কারের শূন্যতা উন্মোচন করেছে এবং শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতকে চাপা দেওয়ার ব্যাপারে তাদের শীতল অঙ্গীকার দেখিয়েছে।

বেশ কিছু সংস্কারের পর সৌদি নারীরা এখন গাড়ি চালাতে, পাসপোর্ট পেতে এবং নিজেরাই ভ্রমণ করতে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন এবং বিবাহবিচ্ছেদ করতে সক্ষম হচ্ছে। তবে পুরুষের তুলনায় নারীদের জন্য বিবাহবিচ্ছেদ এখনো বেশ কঠিন। এছাড়া সন্তানের উপর পুরুষের হেফাজত ও নারীরা বিয়ের অনুমতি পাচ্ছে। তবে বিদেশী নারীদের জন্যে পোশাক কোড শিথিল হলেও অধিকার কর্মীরা বলছেন যে সৌদি নারীরা বিধিনিষেধের সম্মুখীন হচ্ছেন।