মহাকাশে কেন বুড়ো হন না নভোচারীরা
হাকাশ লুকিয়ে আছে অনন্ত যৌবনের রহস্য! একবার সেখানে পৌঁছতে পারলে আর আসে না বার্ধক্য! মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের প্রতিষ্ঠান নাসা-র গবেষণায় মিলেছে তেমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা নিয়ে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছে বিজ্ঞানী থেকে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের।
এই কাজে নভশ্চর স্কট কেলি ও তার ভাই মার্ককে বেছে নেয়া হয়। এই দু’জন আবার যমজ হওয়ায় শারীরিক গঠনে অনেক মিল ছিল তাদের। মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা স্কটকে মহাকাশ অভিযানে পাঠান। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন বা ISS-এ টানা ৩৪০ দিন ছিলেন তিনি। ওই সময় তার ভাই মার্ক ছিলেন আমেরিকায় নিজের বাড়িতে। মহাশূন্য থেকে ফেরার পর মার্ককে পাশে নিয়ে স্কটের শরীর পরীক্ষা করা হয়। তখনই চোখ কপালে ওঠে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের।
নাসা সূত্রে খবর, শারীরিক পরীক্ষায় দেখা যায় স্কটের জিনের পরিবর্তন হয়েছে। ভাই মার্কের চেয়ে অনেক বেশি প্রাণবন্ত ও কম বয়সী দেখাচ্ছিল তাকে। জিনের পরিবর্তনের কারণেই তার আয়ু বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। যদিও কিছুদিনের মধ্যেই বিজ্ঞানীদের এই ভুল ভেঙে যায়। মাস ছ’য়েকের মাথায় ফের স্কটের শারীরিক পরীক্ষা করেন তারা। তখন দেখা যায় ফের আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে তার জিন।
কিন্তু কী ভাবে এতো অল্প সময়ের মধ্যে পুরোপুরি বদলে গেল জিনের গঠন? বিষয়টি বুঝতে অন্যান্য নভশ্চরদের উপরেও টানা পর্যবেক্ষণ চালান নাসা-র জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। পরে এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসেন তারা। গবেষকদের দাবি, মহাশূন্যে ভরশূন্য অবস্থায় থাকতে হয় নভশ্চরদের। এর জেরেই ধীরে ধীরে বদলে যায় জিনের গঠন। তবে বদল হয় না জিনের চরিত্রের। ফলে পৃথিবীতে ফিরে এলেই ফের পুরনো অবস্থায় ফিরে যায় জিন।
প্রসঙ্গত, ঠিক এই একই কারণে মহাকাশে থাকলে কোনও ব্যক্তির উচ্চতা কিছুটা বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন মহাকাশে কাটিয়ে কয়েক বছর আগে পৃথিবীতে ফিরে আসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনীতা উইলিয়ামস। সূত্রের খবর, ওই সময় তার উচ্চতা প্রায় দেড় ইঞ্চি বেড়েছিল। পরে অবশ্য ফের পুরনো উচ্চতায় ফিরে আসেন সুনীতা। তাহলে কি মহাকাশে থাকলে সত্যিই বেড়ে যাবে মানুষের আয়ু? নাসা-র দাবি, এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন জীবন নিয়ে উক্তি