আমিরাতকে পেছনে ফেলে রেমিট্যান্স পাঠানোতে শীর্ষে এলো যুক্তরাষ্ট্র

দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আসার দিক থেকে শীর্ষে অবস্থান করছিল মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর দ্বিতীয় স্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু হঠাৎ করেই বাংলাদেশে প্রবাসী আয় আসার দিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পেছনে ফেলে শীর্ষে চলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ গেল অক্টোবরেও সংযুক্ত আরব আমিরাতের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে ১৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পুরো সময়েই যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় আমিরাত থেকে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় বেশি এসেছিল। ওই অর্থবছরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৪৫৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৯৬ কোটি ১৬ লাখ ডলার। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে ১৬৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির নানামুখী কারণ থাকতে পারে। বড় কারণ হতে পারেÑ বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে ডলার কেনে। তবে ব্যাংকের কাছে বিক্রির সময় অনেক ক্ষেত্রে যে দেশের এক্সচেঞ্জ হাউস ওই দেশের রেমিট্যান্স হিসেবে গণ্য করা হয়। এটিও অন্যতম কারণ হতে পারে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেও (জুলাই-আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় বেশি এসেছিল। তথ্য বলছে, জুলাই মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৩ কোটি ২৬ লাখ ডলার আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল ২৩ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। আগস্ট মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৩ কোটি ৭৭ লাখ ডলার আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার।

কিন্তু পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে প্রবাসী আয় আসার দিক থেকে দীর্ঘদিন শীর্ষে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। তথ্য বলছে, গেল সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার। আর একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৮ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে ২ কোটি ৬১ লাখ ডলার। পরের মাস অক্টোবরেও আরব আমিরাতের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে। অক্টোবরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৪৯ কোটি ৭৯ লাখ ডলার।

অপরদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের হিসাবেও সংযুক্ত আরব আমিরাতের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে। তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ১৩৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। আর একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ১৪১ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

অন্যদিকে, গেল সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে সৌদি আরব থেকেও প্রবাসী আয় কম এসেছে। দেশটি থেকে সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৪ কোটি ডলার আর অক্টোবরে এসেছে ৩১ কোটি ডলার। এ ছাড়া, গেল অক্টোবরে মালয়েশিয়া থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ১৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ১৯ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, ইতালি থেকে ১৩ কোটি ৬৪ লাখ, কুয়েত থেকে ১২ কোটি ৭৯ লাখ, ওমান থেকে ১২ কোটি ২৭ লাখ, কাতার থেকে ৮ কোটি ৭৯ লাখ, বাহরাইন থেকে ৭ কোটি ২৩ লাখ, সিঙ্গাপুর থেকে ৬ কোটি ৩৪ লাখ, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ২ কোটি ৫৮ লাখ, ফ্রান্স থেকে ২ কোটি ১৮ লাখ, গ্রিস থেকে ১ কোটি ৮৯ লাখ, কানাডা থেকে ১ কোটি ৫৯ লাখ, জর্ডান থেকে ১ কোটি ৪১ লাখ, জার্মাানি থেকে ১ কোটি ৩৪ লাখ, স্পেন থেকে ১ কোটি ২৭ লাখ, অস্ট্রেলিয়া থেকে ১ কোটি ২৩ লাখ এবং অন্যান্য দেশ থেকে ৩ কোটি ৩১ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।