আমিরাতে বন্যা প্রতিরোধী বাড়ির খোঁজে ক্রেতারা
দুবাই ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে ৮.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বৃষ্টির পানি সরিয়ে নিতে ‘স্টর্ম ওয়াটার রানঅফ সিস্টেম’ তৈরি হবে, যা ড্রেনেজ সক্ষমতা ৭০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াবে এবং প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি সঞ্চালনে সক্ষম হবে। শারজাহ সাস্টেইনেবল সিটি এর মধ্যে অন্যতম উদাহরণ। এখানে অবাক করার বিষয় হল, এক বছর বন্যায় অনেক স্থান ডুবে গেলেও সেখানে বন্যার কোনো প্রভাবই পড়েনি। এখানের এই বন্যা-প্রতিরোধী প্রকল্প দেখে অনেকেই তখন তাৎক্ষণিকভাবে বুকিং দিয়ে দেন। এমনকি এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই কমিউনিটির সব ইউনিট বিক্রি হয়ে যায়—আরো অনেক ক্রেতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
দুবাইয়ের মেনিফেস্ট রিয়েল স্টেটের সিইও জেফ রাজু কুরুভিল্লা জানালেন, এখন প্রায় ৫০ শতাংশ ক্রেতা বাড়ি কেনার আগে বন্যা ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চান। সব ক্ষেত্রে তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে প্রভাব না ফেললেও বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বন্যার পর কিছু এলাকায় সাময়িকভাবে ক্রেতার আগ্রহ কমে গেলেও, ডেভেলপার ও সরকারের দ্রুত পদক্ষেপে বাজার দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায়।
মেট্রোপলিটন প্রিমিয়ার প্রপার্টিস নামের দুবাইয়ের অপর এক আবাসন কোম্পানির ডেপুটি হেড ইব্রাহিম আব্দুল করিম বলেন, বন্যার সময় যেসব কমিউনিটিতে ড্রেনেজ পাম্প কাজ করেনি, সেখানে চাহিদা সাময়িকভাবে কমে গিয়েছিল। তবে সমস্যা সমাধান হলে ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পর মানুষ আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে।
বন্যার প্রথম ধাক্কা সামাল দিয়ে আরব আমিরাতের রিয়েল এস্টেট মার্কেট দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বার্ষিক অ্যাসেট ভেল্যু ২৭.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ভিলার মূল্য বেড়েছে ৩২.৫% এবং অ্যাপার্টমেন্টের ২২.৪%। এই গতি ২০২৫ সালেও অব্যাহত, মার্চে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির সূচক ২৫.৯ শতাংশে পৌঁছে যাবে।
দুবাইর আবাসন ‘মুডন’র মতো কিছু কমিউনিটি রোডস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির সঙ্গে অংশীদারিত্বে স্টর্ম ওয়াটার ডাইভার্শন লেগুন তৈরির পরিকল্পনা নিচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় তাদের প্রস্তুতির দৃষ্টান্ত।
জলবায়ুর এই অনিশ্চয়তার যুগে, এখন ইউএই-র ক্রেতারা শুধু বাড়ির সৌন্দর্য নয়, বরং তার টেকসই ও জলবায়ু সহনশীলতাকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন। আর ডেভেলপাররাও তা বুঝে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিচ্ছেন।