বিশ্ববাজার কাঁপাতে বিশাল রুবি এনেছে দুবাই-ভিত্তিক কোম্পানি
রত্নপাথরের জগতে অভূতপূর্ব চমক এনে দিয়েছে একটি আমিরাতের বাণিজ্য নগরী দুবাই-ভিত্তিক কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির দখলে রয়েছে এক জোড়া বিশালাকৃতির প্রাকৃতিক রুবি, যাদের সম্মিলিত ওজন প্রায় ২৪.৩৮ কিলোগ্রাম বা ১ লাখ ২১ হাজার ৮৮০ ক্যারেট। অভিজাত এই রত্নজোড়ার সম্ভাব্য মূল্য ধরা হচ্ছে প্রায় ১৮৪.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। খবর গালফ নিউজ
এই দুই রুবির মালিকানা এক ব্যক্তির নামে, যিনি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (পিওএ) প্রদান করেছেন ব্লকচেইন ডিজিটাল গোল্ড ট্রেডিং নামক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও স্টিভেন ফস্টার জানিয়েছেন, এই রুবিগুলোর উৎস বার্মার বিখ্যাত মোগক ভ্যালি, যা ১৯শ শতক থেকে বিশ্ববিখ্যাত রত্নখনি হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুবিগুলো পৌঁছায় দুবাইয়ে।
ছোট রুবিটির ওজন ১০.৩২ কেজি (৫১ হাজার ৬৩০ ক্যারেট) এবং বড়টির ওজন ১৪.০৫ কেজি (৭০ হাজার ২৫০ ক্যারেট)। তুলনা হিসেবে বলা যায়, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দামি রুবি ছিল ‘বুর্জ আলহামাল’, যার ওজন ছিল মাত্র ২.৮ কেজি এবং বিক্রি হয়েছিল ১২০ মিলিয়ন ডলারে।
ফস্টার জানান, বিশেষজ্ঞদের মতে দক্ষ হাতে এই রুবিগুলো কাটা হলে পাওয়া যেতে পারে প্রায় ৩৫ হাজার ক্যারেট মানসম্পন্ন রত্ন। তবে আমরা এগুলোর প্রাকৃতিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে চাই – যেন এরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং বিরল রুবি হিসেবে পরিচিত হয়। রুবিগুলোর মূল্যায়ন ও সার্টিফিকেশন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক রত্নবিদ্যা ইনস্টিটিউট (আইজিআই)-এর সনদও।
প্রতিষ্ঠানটির লিগ্যাল ও কমপ্লায়েন্স অফিসার মোহাম্মদ আলমাসরি জানিয়েছেন, তারা এই রুবিগুলোর জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছে, যা এদের মর্যাদা ও বাজারমূল্য আরও বাড়িয়ে তুলবে।
ফস্টার আরও বলেন, ল্যাব-উৎপাদিত হীরার জনপ্রিয়তা বাড়ায় এখন প্রাকৃতিক রত্নের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। অনেকেই এখন রুবিকে বিকল্প সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করছেন – যার দাম প্রতি ক্যারেটে অনেক সময় হীরেকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
প্রাকৃতিক রত্নপাথরের ক্রমবর্ধমান বাজারে দুবাইয়ের অবস্থান দিন দিন আরও দৃঢ় হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বখ্যাত নিলামঘর সোথবি’স প্রথমবারের মতো আবু ধাবিতে আয়োজন করেছে হীরার প্রদর্শনী, যেখানে রয়েছে দুর্লভ ‘দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট ব্লু’ হীরাও, যা আগামী মাসে জেনেভায় নিলামে তোলা হবে।
ফস্টার বলেন, দুবাই আজ বৈশ্বিক রত্নপাথরের রাজধানী হয়ে উঠছে। এই রুবিগুলো হয়তো কোনো আন্তর্জাতিক নিলামে তোলা হবে, অথবা বিক্রি হবে কোনো ব্যক্তিগত সংগ্রাহকের কাছে। যেটিই হোক না কেন, এদের অসাধারণতা ও দামী মর্যাদা নিঃসন্দেহে বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করবে।