রংপুরে দিন দিন তরমুজের দাম কমতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে বলে দাবি বিক্রেতাদের। দাম কমলেও প্রত্যাশানুযায়ী দেখা মিলছে না ক্রেতার। হঠাৎ ক্রেতারা তরমুজ বিমুখ হওয়ায় লোকসানের বোঝায় মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের। তবে শহর ও গ্রামে তরমুজের দামে হেরফের রয়েছে।

বর্তমানে বিভাগীয় নগরী রংপুরে ধরণভেদে তরমুজ ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও পরিপক্ব তরমুজ কেজিপ্রতি ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে গ্রামে তরমুজের দাম এর চেয়েও কম। পীরগাছা উপজেলায় তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজিতে। তারপরও আশানুরূপ ক্রেতা না থাকায় উপজেলার রেলস্টেশন এলাকায় মাইকিং করে তরমুজ বিক্রি করছেন একজন ফল ব্যবসায়ী।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রংপুর নগরীর সিটি বাজার, জিলা স্কুল মোড় সংলগ্ন ফল বাজার, শাপলা চত্বর এলাকা ঘুরে তরমুজ বেচাকেনার এমন চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবহাওয়াজনিত কারণে তরমুজের দাম কমতে শুরু করেছে। সঙ্গে আশানুরূপ ক্রেতা মিলছে না বলেও হতাশ তারা।

তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দাবি- নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের কারণেই তরমুজ সিন্ডিকেট দুর্বল হয়ে পড়ায় দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমেছে।

ফল ব্যবসায়ীরা বলেন, ১০০ টাকা কেজির তরমুজ এখন ৪০ টাকা বিক্রি করছি। তারপরও ক্রেতার চাহিদা নেই। আগের কেনা তরমুজের লোকসান তুলতে হলে দ্রুত নতুন করে কেনা তরমুজ বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। আল্লাহ রহম করলে লোকসান পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে আশা করছি।

বাজারে এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ১৫ রমজান পর্যন্ত তরমুজ কিনতে বাজারে আসিনি। কারণ তখন দামটা অস্বাভাবিক বেশি মনে হয়েছে। এখন দাম কমায় পাঁচ কেজি ওজনের একটা তরমুজ ১৮০ টাকায় কিনেছি। অনেকদিন পর হলেও আজ পরিবারের সবাইকে নিয়ে তরমুজ খেতে পারব।

এদিকে শুক্রবারের (২৯ মার্চ) মতো আজও পীরগাছা রেলস্টেশন সংলগ্ন একটি ফলের দোকানে মাইকিং করে মাত্র ২৫ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে তরমুজের দাম কমার নেপথ্যে বাজার মনিটরিংয়ের প্রভাব রয়েছে বলে দাবি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের। শনিবার দুপুরে রংপুর মহানগরীর সিটি বাজার মনিটরিংয়ে এসে সংস্থাটির মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের কারণে আগের চেয়ে দ্রব্যমূল্য এখন অনেকটা কমছে। মনিটরিংয়ের কারণে বর্তমানে ৮০০ টাকার তরমুজ (পাঁচ কেজি ওজনের) ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম ৮০০ টাকা থেকে ৫৯৫ টাকায় এবং ১০০ টাকার বেগুন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যার ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে।

এ সময় শুধু পণ্যের দাম বাড়লে মিডিয়ায় প্রচার না করে দাম কমলেও তা প্রচার করতে সংবাদকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বেগুনের কেজি ১০০ টাকা ছিল, এতদিন সেটি মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে। বর্তমানে দাম কমে বেগুন এখন রংপুরে ৩০ টাকা কেজি, লেবুর হালি ৮০ টাকা প্রচার হলেও বর্তমানে ২৫ থেকে ৩০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। সেটি মিডিয়ায় প্রচার হয়নি। মিডিয়ায় উচ্চ দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি প্রচার হলেও পণ্যের দাম কমার বিষয়ে প্রচার হয় না। যার ফলে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগটা গ্রহণ করে।