সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে খেলার দ্বারপ্রান্তেই ছিলেন উসমান খান। দেশটির ক্রিকেট বোর্ড ইসিবির সঙ্গে চুক্তিও সেরে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু হুট করেই বদলে যায় তার ভাবনা। সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের হয়ে খেলার। তবে, ক্যারিয়ারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নিয়ে একদমই অনুতপ্ত নন টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান।

বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি লঙ্ঘন করায় এরই মধ্যে উসমানকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। এই সময়ে আইএল টি-টোয়েন্টি, আবু ধাবি টি-টেন লিগসহ ইসিবি আয়োজিত বা অনুমোদিত কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন না তিনি।

পাকিস্তানের করাচিতে জন্ম নেওয়া উসমান দেশটির হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেছেন। কিন্তু সেভাবে সুযোগ না মেলায় একটা সময় পাড়ি জমান তিনি আরব আমিরাতে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির হয়ে খেলার ইচ্ছা ছিল তার। লক্ষ্য পূরণের একেবারে দুয়ারে এসে উল্টো দিকে ঘুরে যান ২৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার।

আমিরাতের হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে তিন বছর দেশটিতে থাকতে হয়। আবু ধাবি টি-টেন ও আইএল টি-টোয়েন্টিতে আমিরাতের স্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন তিনি। কিন্তু গত মার্চে বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলার পরই বদলে যায় তার ভাবনা।

পিএসএলের সবশেষ আসরে মুলতান সুলতান্সের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন উসমান। দলটির ১১ ম্যাচের সাতটি খেলেই আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে যান তিনি। এবারের আসরে মোট সেঞ্চুরি হয়েছে চারটি, যার দুটি তিনি করেন পরপর দুই ম্যাচে।

এরপরই পাকিস্তানের হয়ে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন উসমান। নিউ জিল্যান্ড সিরিজের আগে দলটির প্রস্তুতি ক্যাম্পে ডাক পেতেই সেখানে যোগ দেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরে ওই সিরিজের দলে জায়গাও পেয়ে যান তিনি।

যদিও, পাঁচ ম্যাচ সিরিজের সবকটিতে সুযোগ পেয়েও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি উসমান। চার ইনিংসে রান করেন কেবল ৫৯। তবুও তার ওপর আস্থা রেখে আসছে আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সফরের দলে রেখেছে পাকিস্তান। এই দুই সিরিজের জন্য ঘোষিত ১৮ সদস্যের দল থেকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াড সাজাবে তারা।

আইরিশ ও ইংলিশদের বিপক্ষে দারুণ কিছু করে বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ উসমানের সামনে। লাহোরে রোববার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই ক্রিকেটার বললেন, আমিরাত ছেড়ে পাকিস্তানকে বেছে নেওয়ায় কোনো অনুতাপ নেই তার।

“আমি পারফরম্যান্স দিয়ে পাকিস্তান দলে এসেছি, তাই অতীত নিয়ে ভাবি না। পাকিস্তানের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ। নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার কোনো অনুশোচনা নেই।”

পাকিস্তানের হয়ে খেলতে পেরে উচ্ছ্বসিত উসমান বললেন, দলের প্রয়োজনে যেকোনো পজিশনে খেলতেও আপত্তি নেই তার।

“কোনো চাপ নেই, কারণ আমাকে দেওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছি। নিজের খেলার প্রতি সৎ থেকেছি এবং দলের চাহিদা অনুযায়ী পারফর্ম করেছি। যেকোনো পজিশনে ব্যাটিং করতে আমার কোনো সমস্যা নেই।”

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে আগামী ১০, ১২ ও ১৪ মে। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের চারটি টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়াবে ২২, ২৫, ২৮ ও ৩০ মে।

আগামী ১ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে শুরু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযান শুরু ৬ জুন, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। গ্রুপ পর্বেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে খেলবে তারা, ৯ জুন।