ভাগ্য কখন কাকে কোথায় নিয়ে যায় তা বলা খুবই মুশকিল। মুহুর্তেই কেউ হয়ে যায় রাজা আবার কেউ হয় ফকির। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক প্রবাসীর জীবনে এটাই ঘটল। মুহুর্তের মধ্যেই তিনি হয়ে গেলেন মিলিয়নার।

গত দুই বছর ধরে মাহজুজ ড্রতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে ‍২৫০০০ দিরহাম এর বেশি খরচ করে ফেলেন এই প্রবাসী। প্রতিবারই ঠিকিট কাটতেন কিন্তু লটারিতে জয়ী হচ্ছিলেন না। তবে তিনি হাল ছেঁড়ে দেন নি। নিয়মিত টিকিট কেটেই যাচ্ছিলেন। তার এই ধৈর্য তাকে হতাশ করেনি। অবশেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্য নগরী দুবাইয়ে মাহজুজ ড্রতে ২০ মিলিয়ন দিরহাম বাজিমাত করলেন তিনি। আমিরাতের ২০ মিলিয়ন দিরহামে বাঙ্গালেশি মূদ্রায় আসে প্রায় ৬০ কোটি টাকা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি আর্কিটেকচারাল ফার্মে কাজ করা ৪৭ বছর-বয়সী শচীন ২০২২ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে মাহজুজ ড্র-তে একজন নিবেদিত অংশগ্রহণকারী ছিলেন।এত বড় অংকের টাকা পেয়ে তিনি হতবাক হয়ে যান। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না যে তিনি এখন একজন কোটিপতি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “এই জয়টি আমার কাছে সম্পূর্ণ ধাক্কার মতো এসেছিল। খবরটি আমার প্রতিদিনের রুটিনকে বদলে দিয়েছে।

মাহজুজের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ফোন পাওয়ার পর থেকে আমি ঘুমাতে পারছি না। লটারিতে তার যে পাঁচটি সংখ্যা মিলেতেছে তা হলো – ২, ৯, ১০, ১৫, ৩৬, যা তিনি এলোমেলোভাবে ড্রয়ের জন্য নির্বাচন করেছিলেন। লটারির সংখ্যা বাছাই নিয়ে এই এশিয়ান প্রবাসী বলেন, “কখনও কখনও, আমার বাচ্চারা সংখ্যাগুলো বেছে নেয়; আমাদের এই সংখ্যা বেছে নেওয়ার একটি প্যাটার্ন আছে – যেমন আমাদের জন্য ভাগ্যবান সংখ্যা নির্বাচন করা বা এলোমেলো নম্বর বেছে নেওয়া।

শনিবার যখন মাহজুজ ড্র বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল তখন তিনি লাইভ ইভেন্টটি দেখতে পারেননি। কারণ এটি হয়েছিল রাতের বেলা। কিন্তু কে জানত তিনি এত বড় লটারি জিতে বসে আছেন। রবিবার সকালে রবিবার সকালে তার মেলবক্স ব্রাউজ করার সময় লটারি বিজয়ের মেইল পেয়ে হতাবাক হয়ে যায়।

আনন্দে তখন তার চোখ দুটি যেন ভিজে আচ্ছিল। মনে মনে তিনি বলছিলেন, আসলেই কি আমি লটারি জিতেছি, আর কোটিপতি হয়ে গেছি? এ নিয়ে ঐ প্রবাসী বলেন, আমি মাহজুজ দলের কাছ থেকে একটি নিশ্চিতকরণ কল পেয়েছি, যা আমার জীবন বদলে দিয়েছে। মূলত এই ফোন কল পেয়েই তিনি নিশ্চিত হন যে তিনি এখন আর গরীব কেউ নন। তিনি এখন দুবাইয়ের একজন কোটিপতি।

এই টাকায় শচীন তার সন্তানদের শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে এবং ভালো কোনো জায়গায় বিনিয়োগ করতে চান য়। এ নিয়ে তিনি বলেন, “আমি যে অর্থ জিতেছি তা দিয়ে, আমি আমার বাচ্চাদের জন্য একটি ভাল ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার আশা করি।

তবে আমি এখনও বিনিয়োগ এবং ব্যয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিইনি, কারণ মাত্র কয়েক দিন হয়েছে। শচীন আরও বিশ্বাস করেন লটারির দিনই তিনি একটি বিড়ালছানা দত্তক নেওয়ার পরে ভাগ্য সহায়ক হয়ে যায়। মূলত এই প্রবাসী শনিবার সকালে একটি বিড়ালকে দত্তক নেয় আর সেদিনই সন্ধায় তিনি লটারিতে ৬০ কোটি টাকা জিতেন।

উল্লেখ্য এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে ‘দ্য বিগ টিকিট’ লটারিতে ৩৫ মিলিয়ন দিরহাম বা ১০৫ কোটি টাকা জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি মুহাম্মদ রায়ফেল৷ যেই খবর সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করেছিল।