চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি থেকে জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।

রেমিট্যান্স আহরণে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যেরই আরেক দেশ সৌদি আরব। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। তৃতীয় স্থানে অবস্থানকারী যুক্তরাজ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২২ কোটি ১২ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেশভিত্তিক রেমিট্যান্সের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক থাকেন মধ্যপ্রাচ্যে। আর তাই এসব দেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সাধারণত সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে সৌদি আরব থেকে। তবে বিদায়ী অর্থবছরের বেশ কয়েক মাস সৌদি আরবকে টপকে শীর্ষ স্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। জুলাই মাসে এ দেশটির অবস্থান রয়েছে চতুর্থ স্থানে। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ কোটি ডলার।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা ওমান থেকে এসেছে ১২ কোটি ডলার। এ ছাড়া মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ১১ কোটি ৬৬ লাখ, কুয়েত থেকে ১১ কোটি ৪৪ লাখ, ইতালি থেকে ১১ কোটি ৩৬ লাখ, কাতার থেকে ১১ কোটি ৩৬ লাখ এবং বাহরাইন থেকে ৪ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

সব মিলিয়ে আলোচ্য সময়ে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৯৭ কোটি ডলার। আগের মাস জুনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১৯ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় কমেছে ২২ কোটি ডলার বা ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ২০৯ কোটি ডলার। সেই হিসাবে, গত অর্থবছরের এই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় কমেছে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

রেমিট্যান্স কমার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল আজহার পরের মাস হওয়ায় প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমেছে। তবে আগামীতে এ আয় আরও বাড়বে। ঈদকে কেন্দ্র করে গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২১৯ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা, যা ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে সর্বোচ্চ ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল।

এর আগে, বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে প্রবাসী বাঙালিরা ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা গত অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বা ৫৮ কোটি ডলার বেশি।

২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে মোট ৩৭৭ কোটি ডলার সমপরিমাণ প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৩৫২ কোটি ডলার। এর মানে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে ২৪ কোটি ডলার বা ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ।

গত এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসার দিক থেকে শীর্ষ দেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে অর্থবছরের শেষ দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে প্রায় ২৬ কোটি ডলার বা ৫৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। শেষ দুই মাসে সৌদি আরব থেকে এভাবে না বাড়লে এবার যুক্তরাষ্ট্রই শীর্ষে থাকত।

বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

গত অর্থবছরে দেশটি থেকে এসেছে ৩০৩ কোটি ডলার। এর পর রয়েছে যুক্তরাজ্য। সেখান থেকে এসেছ ২০৮ কোটি ডলার। পঞ্চম অবস্থানে থাকা কুয়েত থেকে ১৫৬ কোটি ডলার এসেছে। এ ছাড়া কাতার থেকে ১৪৫, ইটালি থেকে ১১৯, মালয়েশিয়া থেকে ১১৩, ওমান থেকে ৭৯ এবং বাহরাইন থেকে ৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।