প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দুই নেতা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে একে অপরের সঙ্গে ১৫ মিনিট কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশি জনগণ, সরকার, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনামের পরিবারের সদস্যদের এবং তার নিজের পক্ষে ইয়েমেনে অপহরণকারীদের নিকট থেকে আনামের মুক্তি লাভের লক্ষ্যে তাদের অসাধারণ প্রচেষ্টা এবং সফল আলোচনার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোয়েন্দা ইউনিটের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তাদের সফল উদ্যোগের ফলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনাম সম্প্রতি ইয়েমেনে অপহরণকারীদের নিকট থেকে মুক্তি লাভ করেন।

শেখ হাসিনা সফল মুক্তির আলোচনার প্রশংসা করে বলেন, আল-কায়েদার বন্দিদশা থেকে আমানের মুক্তিলাভ সংযুক্ত আরব আমিরাত সফল শান্তিস্থাপন এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে দায়িত্বশীল জাতি হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

তিনি আশা করেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত আগামী দিনে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এই ধরনের দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, এই ধরনের সহযোগিতা বিদ্যমান শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং দুই শান্তিপ্রিয় দেশের মধ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ করবে। তিনি দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরও ধন্যবাদ জানান।

উভয় নেতাই স্মরণ করেন, দুদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালের মার্চ মাসে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আগামী বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে। সেই লক্ষ্যে, তিনি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানটি উদযাপনের জন্য যৌথভাবে স্মারক কার্যক্রম গ্রহণের জন্য তার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতিকে এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষে কপ-২৮ আয়োজন করায় শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারকে অভিনন্দন জানান ।

তিনি কপ-২৮ এর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের সঙ্গে এই বৈশ্বিক ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্সি এবং স্টুয়ার্ডশিপের প্রতি তার আস্থা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা তার দেশে সবুজায়ন গঠনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির ভূমিকার প্রশংসা করে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন যে, সংযুক্ত আরব আমিরাত বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলোর একটি সফল সমাধান খুঁজে বের করতে নেতৃত্ব দেবে।

তিনি শান্তিপ্রিয়, আইন মান্যকারী বাংলাদেশি কর্মীদের কাজ করার সুযোগ প্রদানের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানান।
আলোচনার সময়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি তাদের অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অবদানের প্রশংসা করেন।

শেষে, শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান এবং তার মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানুষের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অব্যাহত থাকুক এ প্রত্যাশা করেন।