ফরিদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বসবাসের জন্য বানানো ৩৭ লাখ টাকার অব্যবহৃত দ্বিতল ভবনটি সম্প্রতি নিলামে সাড়ে নয় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ভবনটি ২০০৯ সালে বানানো হয়েছিল। তবে ভবনটিতে একদিনের জন্যও কেউ বসবাস করেননি। দীর্ঘদিন ফাঁকা থাকায় ভবনটি মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছিল।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা মহল্লা এলাকার সোহরাওয়ার্দী সরোবরের (টেপাখোলা লেক হিসেবে অধিক পরিচিত) পূর্ব পাড়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার আবাসনের জন্য ৩৭ লাখ টাকা ব্যয় করে ২০০৯ সালে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবন নিমার্ণের পর জেলা পরিষদের কোনো নির্বাহী কর্মকর্তা একদিনের জন্যও সেখানে বসবাস করেননি। এভাবে কেটে গেছে ১৫ বছর। সম্প্রতি ভবনটি নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে জেলা পরিষদ। ভবনটি নিলামে কিনে নিয়েছেন মো. সুমন নামে এক ঠিকাদার।

ঠিকাদার মো. সুমন বলেন, উন্মুক্ত নিলামে জরাজীর্ণ ভবনটি কিনে নিয়েছি। ভবনটির জানালা দরজা ভেঙে গেছে। তবুও ইট রডসহ অন্যান্য উপাদানের দাম বর্তমানে বেশি হওয়ায় লাভের আশায় ভবনটি কিনেছি।

তিনি বলেন, ঈদ শেষ। এখন অফিস শুরু হলেই আশা করছি জেলা পরিষদের কার্যাদেশ পত্র পাব। সেটা পেলেই ভাঙার কাজ শুরু করে দেব।

জেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরে। ওই সময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর অর্থায়নে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে মেসার্স আর আর কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরে নির্মাণ কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়। ওই সময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন ইয়াসমিন আফসানা।

তবে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে এ ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত কোনো ফাইল পাওয়া যায়নি। ফলে কোন প্রেক্ষাপটে এবং জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার বসবাসের জন্য ডাক বাংলোতে ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এ ভবনটি কোন যুক্তিতে নির্মাণ করা হলো সেই সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, জেলা পরিষদের উদ্যোগে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার জন্য নির্মাণ করা ৩৭ লাখ টাকার নতুন দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটি টেপাখোলা লেকের সৌন্দর্য বর্ধন ও উন্নয়নের জন্য ১৮০ কোটি টাকায় নেওয়া একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে অপসারণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ওই ভবনটি থাকলে লেকের উন্নয়নের জন্য বড় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অন্তরায় সৃষ্টি হয়। তাছাড়া দীর্ঘদিন ওই ভবনটি পড়ে থাকায় দিনদিন দাম কমতেই থাকতো।এজন্য এটি বিক্রি করে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের পথ সুগম করার পাশাপাশি সরকারি তহবিলে কিছু অর্থও জমা করা সম্ভব হয়েছে।