দুবাই থেকে শিখে জমি ছাড়াই চাষবাস, এখন বছরে আয় ৭০ লাখ টাকা
পৃথিবীতে হচ্ছে আবহাওয়ার পরিবর্তন। এ সময়ে প্রয়োজন পুরনো পদ্ধতি ছেড়ে নতুন উপায় চাষাবাদ শুরু করা। এসেছে নতুন কিছু পদ্ধতি, যাতে খুব কম পানিতেই করা যায় চাষ। বা খুব কম জায়গাতেই হয় বেশি পরিমাণ ফসল।
চাষাবাদ
তেমনই এক পদ্ধতি হলো হাইড্রোপনিক পদ্ধতি। বিশ্বে এই পদ্ধতি বিখ্যাত হলেও এবার প্রতিবেশী দেশ ভারতে জনপ্রিয় করলেন রামবীর সিং এবং তুষার আগরওয়াল নামের দুই ব্যক্তি। এই পদ্ধতি অবলম্বন করেই তারা উপার্জন করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। ভারতের উত্তরপ্রদেশের বরেলির বাসিন্দা রামবীর সিং নিজে একজন কৃষক পরিবারের সন্তান। তিনি শিক্ষা ও গণমাধ্যমে বহুদিন কাজ করলেও পরবর্তীকালে গ্রামে ফিরে শুরু করেন কৃষিকাজ। প্রথমে জৈব চাষ করলেও পরবর্তীতে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেন।
২০১৬ সালে দুবাই গিয়েছিলেন রামবীর। সেখানেই তিনি দেখেন কিভাবে জমি ছাড়াই চাষ করে ভালো উপার্জন করছেন সেখানকার বহু মানুষ। কয়েকদিন সেখানে থেকে সমস্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। এরপরই তিনি নিজের বাড়িতে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন। লাগান অনেক ধরনের ফল ও সবজি। তার লক্ষ্য হলো জৈব পদ্ধতিতে চাষ যেন আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়।
তুষার আগরওয়াল ধানবাদ অঞ্চল থেকে প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করলেও বিবিএ পড়ার জন্য বেঙ্গালুরু চলে যান। ২৭ বছর বয়সী তুষার এরপর ২০১৮ সালে আহমেদাবাদে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। কলেজে থাকার সময় থেকেই নিজের স্টার্টআপ নিয়ে উৎসাহী ছিলেন এই তরুণ। ২০২০ সালে, তার বন্ধুদের সাথে, রাইজ হাইড্রোপনিক্স নামে তার স্টার্টআপ শুরু করে। এরই সাথে সারা দেশে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে হাইড্রোপনিক সিস্টেম স্থাপনেও মুখ্য ভূমিকা তাদের। এক বছরে তারা ৩০ টিরও বেশি প্রকল্পে কাজ করেছে।
হাইড্রোপনিক চাষের সাহায্যে, জমি ছাড়াই চাষ করা যায় এবং তার সাথে খুবই কম জলের প্রয়োজন হয়। নারকেলের বর্জ্য থেকে তৈরি প্রাকৃতিক আঁশ মাটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এরপর জলের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ প্ল্যান্টে পরিবহন করা হয়। এই কৌশলের জন্য সাধারণ তুলনায় মাত্র ৩০ শতাংশ জলের প্রয়োজন হয়
এই ধরনের চাষে সেচের জন্য খুব বেশি চিন্তার করার প্রয়োজন হয় না। এটির স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে যে কোনো জায়গায় বসেই গাছের যত্ন নেওয়া যায়। একটি সুইচের মাধ্যমে গাছগুলিতে জল এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই সরবরাহ করা যেতে পারে। এছাড়াও এ ধরনের চাষ জনপ্রিয় হওয়ার আরো একটি কারণ হলো এটি খুবই ছোট জায়গায় করা যেতে পারে। এই চাষ খুবই লাভজনক।