সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির শারজাহতে আসবাবপত্রের কারখানায় অ;গ্নিকা;ণ্ডে নি;হ;ত প্রবাসীদের ম;রদে;হ দ্রু;ত ফিরে পেতে চান স্বজনরা।

মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনায় মৃ;ত্যু;র খবর পেয়ে নোয়াখালীর সেনবাগে নি;হ;ত;দের বাড়িতে চলছে শো;কের মাতম। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা অসহায় পরিবারগুলো দ্রুত ম;রদেহ ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি সরকারের কাছে আর্থিক সহা;য়তা;ও চেয়েছেন।

সেনবাগ থানার ওসি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী জানিয়েছেন, আবুধাবির শারজাহতে মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে বৈদ্যুতিক শ;র্টসা;র্কিট থেকে অ;গ্নিকা;ণ্ড ঘটে।

আগুনে ঘু;ম;ন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে মারা যান, সেনবাগের ডমুরুয়া ইউনিয়নের পলতি তারাবাড়ীয়া গ্রামের আবু তাহের পাটোয়ারী বাড়ির মৃ;ত আব্দুল কাদেরর ছেলে মো. ইউছুপ মিয়া (৪৩), একই এলাকার বড়বাড়ির মীর আহম্মদের বড় ছেলে তারেক হোসেন বাদল (৪০) ও পলতি হারিছ মিয়ার বাড়ির আবদুল ওহাবের ছেলে মো. রাসেল (৩০)।

এ ঘটনায় নি;হ;ত আরেকজনের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়. তার নাম সুমন।

আবুধাবিতে অ;গ্নি;কা;ণ্ডে নি;হ;ত (বাঁ থেকে) মো. ইউছুপ মিয়া, তারেক হোসেন বাদল ও মো. রাসেল।
নি;হ;ত ইউছুপের ছোট ভাই ডা. গোলাম রসুল জানান, ২৫ বছর আগে তার বড় ভাই জীবিকার সন্ধানে আবুধাবিতে পাড়ি জমান। বছরখানেক আগে তিনি ধার দেনা করে আবুধাবির শারজাহতে সামাইয়া পাঁচ নম্বর এলাকায় একটি সোফা ফ্যাক্টরির ব্যবসা শুরু করেন।

“সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য এলাকার বেশ কয়েকজনকে নিয়ে যান বড় ভাই। মঙ্গলবার ঘটনার সময় তারা চারজন ঘুমিয়ে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে ফ্যাক্টরি পুড়ে যায় এবং তারা চারজনই দগ্ধ হয়ে মারা যান। ”

পাশে তার অপর ভাই আনোয়ার হোসেনের ফ্যাক্টরিও পুড়ে যায়। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষ;তি হয়েছে বলে জানান গোলাম রসুল। এদিকে পিতাকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ ইউছুপের দুই সন্তান। ইউছুপের শতবর্ষী মা মহব্বতের নেছা শেষবারের মতো ছেলেকে দেখার আকুতি জানান সরকারের কাছে।

দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে তারেক হোসেন বাদলের বাড়িতে আসেন স্বজনরা।
একই এলাকার তারেক হোসেন বাদলের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম।

একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা তার বাবা মীর আহাম্মদ। তার তিন ছেলের মধ্যে দুজনই প্রতিবন্ধী। তাই ১০ মাস আগে ধার-দেনা করে বাদলকে আবুধাবি পাঠান তিনি।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাতে বাড়ির পাশের ইউছুপের কাছে বেড়াতে যান বাদল। কিন্তু সেখানেই আগুনে পুড়ে তার মর্মান্তিক মৃ;ত্যু হয়।

“বাদলের তিন ছেলে লেখাপড়া করছে। তাদের কি হবে? কীভাবে এত ধার শোধ করব?” প্রশ্ন সন্তান হারা এই পিতার।

একই ইউনিয়নের রাসেলের বাড়িতেও স্বজনদের কান্নার রোল। সন্তানকে হারিয়ে নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম জ্ঞান হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।

রাসেলের চাচা সাহাব উদ্দিন জানান, রাসেলের কোনো ভূমি বা বসতঘরও নেই। তার মা, স্ত্রী ও এক সন্তান চাচা আবদুস ছাত্তারের ঘরে থাকেন। তার কন্যা সন্তানটি প্রতিবন্ধী।

“এর মধ্যে গত বছরের এপ্রিল মাসে ধার-দেনা ও কিস্তি নিয়ে রাসেল আবুধাবিতে ইউছুপের সোফা ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে যায়। সেই কিস্তির টাকাও এখনো পরিশোধ করতে পারেননি রাসেল। তার মধ্যেই সে মারা গেল।”

নিঃস্ব এই পরিবারটির জন্য সরকারি সহয়তার ব্যবস্থার অনুরোধ করেন তিনি।