সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ২০২৪ সালের শুরু থেকেই আবুধাবিভিত্তিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার আদর্শ মারবানের রফতানি বাড়াবে। উত্তোলন কমিয়ে যাওয়া নিয়ে ওপেক প্লাসের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতানৈক্য চলছে। পাশাপাশি এ সময় ইউএইর পরিশোধনাগারে রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমও শুরু হবে। তাই রফতানি বাড়াতে আগ্রহী দেশটি। এমন তথ্য জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। খবর রয়টার্স।

আগামী বছর ওপেক সদস্য নাইজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলাসহ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলের মতো নন-ওপেক দেশগুলো পূর্ণমাত্রায় উত্তোলন চালিয়ে যাবে। তাদের পাশাপাশি ইউএই উত্তোলন বাড়ালে বাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়বে।

এর মধ্যে ফিউচার মার্কেটে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ও ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দামের ওপর নিম্নমুখী প্রভাব পড়েছে। একই কারণে স্পট মার্কেটে মারবানের বাজার দরও চাপের মুখে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিঙ্গাপুরভিত্তিক ব্যবসায়িক সূত্র বলছে, ‘আগামী বছর বাজারে মারবান ক্রুডের বড় ধরনের সরবরাহ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছে।’

তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেও আবুধাবি ন্যাশনাল তেল কোম্পানির (এডিএনওসি) থেকে কোনো মন্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স।

ওপেক প্লাস জোটের সঙ্গে করা চুক্তি অনুসারে ইউএইর আগামী জানুয়ারিতে দৈনিক দুই লাখ ব্যারেল থেকে ৩২ লাখ ১৯ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করার কথা রয়েছে। একই সময়ে আবুধাবির দৈনিক ৮ লাখ ৩৭ হাজার ব্যারেল সক্ষমতার রুওয়াইস পরিশোধনাগারে রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে। অর্থাৎ এ সময় দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে আসবে।

আগামী ৩০ নভেম্বর ওপেক প্লাস জোটের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে অ্যাঙ্গোলা ও নাইজেরিয়া উত্তোলন বাড়ানোর জন্য চাপ দেয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বর্তমানে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) প্রত্যাশা করছে, ২০২৪ সালে জ্বালানি তেলের বাজারে কিছুটা উদ্বৃত্ত আসবে। এমনকি ওপেক প্লাস জোট উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত আগামী বছর পর্যন্ত বহাল রাখলেও বছর শেষে বাজার ঘাটতিতে পড়বে না।

স্পট মার্কেটে বৃহস্পতিবার জানুয়ারিতে সরবরাহ চুক্তিতে মারবানের দাম ছয় মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে। রয়টার্সের তথ্য বলছে, দুবাই ও ওমানের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের তুলনায় মারবানের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ ডলার ৪০ সেন্টে কমেছে। সাধারণত এ দুটি বাজার আদর্শের দাম মারবানের চেয়ে কম থাকে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আটলান্টিক অববাহিকা থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়ায় মারবান আরো বেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়েছে। কারণ চলতি সপ্তাহে আইসিই বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম দুবাইয়ের কাছাকাছি স্তরে নেমে এসেছে। অক্টোবরের দামের চেয়েও বর্তমানে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ ডলার ১৩ সেন্টে কমে এসেছে।

এসএন্ডপি গ্লোবাল প্লাটসের অনুমোদিত পাঁচটি গ্রেডের মধ্যে এখন মারবানের দামই সবচেয়ে কম। চলতি মাসে এসএন্ডপি গ্লোবাল প্লাটসের প্লাটফর্মে সাতটি মারবান কার্গো সরবরাহ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এটিকে অস্বাভাবিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।