বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন সোমালি জলদস্যুরা। নাবিকদের প্রয়োজনীয় সকল খাবার, পানির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তারা।

জানা গেছে, বর্তমানে নাবিকদের নিজ নিজ কেবিনে থাকতে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে খাবার ও পানি নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিল সেটাও কেটে গেছে। উপকূল থেকে খাবার আনছে জলদস্যুরা। সোমালিয়ার থেকে ছাগল এনে সেটা দিয়ে তেহারি বানিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে নাবিকদেরকে।

জাহাজটির মালিকপক্ষের সঙ্গে মুক্তিপণের আলোচনা ফলপ্রসূভাবে চলতে থাকায় জলদস্যুদের আচরণে এমন পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করছেন নৌ খাতের অভিজ্ঞজনরা।

এর আগে জলদস্যুরা একই মালিকের এমভি জাহান মণি নামের আরেকটি জাহাজ জিম্মি করেছিল ১৩ বছর আগে। তখনও মুক্তিপণের আলোচনা শুরু হওয়ার পর জলদস্যুরা ভালো আচরণ করেছিল জিম্মিদের সঙ্গে। জাহান মণি জাহাজে জিম্মি হওয়া নাবিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘মুক্তিপণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে থাকলে ফুরফুরে মেজাজে থাকে জলদস্যুরা। তখন তাদের আচরণেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। আমরা ৯৯ দিন পর মুক্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ দিকে আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে তারা। এখনও তাই ঘটছে এমভি আবদুল্লাহর সঙ্গে।’

জাহাজটির মালিকপক্ষ বলছে, প্রতিদিন তাদের সঙ্গে নাবিকদের কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে জলদস্যুরা। মালিকপক্ষ তাদের সঙ্গে আলোচনাও অব্যাহত রেখেছে। তারা আশা করছেন, আগের চেয়ে দ্রুততম সময়ে ২৩ নাবিককে জাহাজসহ মুক্ত করতে পারবে তারা।

গত ১২ মার্চ জাহাজটি সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। তখন সেটিতে ২৫ দিনের খাবার ও পানি মজুত ছিল। এর পর থেকে সেই খাবার ও পানিতে ভাগ বসিয়েছে জলদস্যুরা। শিগগির খাবার ও পানির মজুত শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন নাবিকরা। তবে এগুলো ফুরিয়ে গেলে কী হবে– তা নিয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে আলাপ করেছে জাহাজটির মালিকপক্ষ। জলদস্যুরা আশ্বাস দিয়েছে, খাবার ও পানির কোনো সংকট হবে না জাহাজে। প্রয়োজন মতো এটির ব্যবস্থা করবে তারা।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনান চৌধুরী বলেন, ‘জলদস্যুরা মুক্তিপণের জন্য কখনও কখনও খারাপ ব্যবহার করে। মুক্তিপণের ব্যাপারে নিশ্চিত হলে তারা ভালো ব্যবহার করতে থাকে। আলোচনা চলতে থাকায় দস্যুদের আচরণে পরিবর্তন এসেছে।’