চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী এবং তাঁর স্ত্রীকে উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁদের বি;রু;দ্ধে মোট ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপের একাধিক মা;ম;লা রয়েছে। রোববার অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ নির্দেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই ব্যবসায়ীর নাম মোহাম্মদ আলী। তাঁর স্ত্রীর নাম জেবুন্নেসা আক্তার। দুজন বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

মোহাম্মদ আলী ইমাম গ্রুপের চেয়ারম্যান। নব্বইয়ের দশকে খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের বাজারের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতো তাঁর প্রতিষ্ঠান ইমাম ট্রেডার্স। পরে গ্রুপের ব্যবসা সম্প্রসারণ হয় গার্মেন্টস, যন্ত্রপাতি আমদানিসহ নানা খাতে। একটি সূত্র জানায়, এসব খাতে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের বেশিরভাগ বিনিয়োগ হয়েছে জমি কেনায়।

বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, ঋণের বিপরীতে কোনো সম্পত্তি বন্ধক না থাকায় টাকাগুলো আদায় করা যাচ্ছে না। তাই দুবাইয়ে থাকা ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, আদেশে বিচারক বলেন, দেশের অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে নানা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছেন ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামে ১৫টি মামলা রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপের অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়েছে। ১০ বছর আইনি লড়াই চালিয়েও ওই টাকা উদ্ধার করতে পারেনি ব্যাংকগুলো।

বিচারক বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে তা বিদেশে পাচার করার মাধ্যমে এই ঋণখেলাপিরা রাষ্ট্রের ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। দীর্ঘ এক যুগ ধরে এই শীর্ষ ঋণখেলাপিরা কোনো ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করার কারণে ব্যাংকের বিনিয়োগ খাতে আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে এবং নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বিচারক আদেশে আরও বলেন, নাগরিকদের আমানতের টাকা ঋণের নামে মুষ্টিমেয় দুষ্কৃতকারীর বিদেশে পাচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নাগরিকদের আমানতের অর্থ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় মোহাম্মদ আলী ও তাঁর স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হলো। সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো