শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল (এসসিআই) বাংলাদেশ অফিসের উদ্যোগে গত রমজান মাসে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (দৃষ্টি প্রতিবন্ধী) শিক্ষার্থীদের নিয়ে হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় ঢাকার দক্ষিণখানের মাদরাসাতুর রহমান আল আরাবিয়ায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা তিন গ্রুপে (প্রথম গ্রুপ ৫ পারা, দ্বিতীয় গ্রুপ ১০ পারা, তৃতীয় গ্রুপ ৩০ পারা) অংশগ্রহণ করে।

ওই প্রতিযোগিতার প্রত্যেক গ্রুপে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী বিজয়ী, তাদের ওস্তাদ ও গাইডসহ মোট ১৪ জনের ওমরাহ পালনের ব্যবস্থা করেছে শারজাহ চ্যারিটি বাংলাদেশ অফিস। এর আগে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

পবিত্র ওমরাহ পালনের সুযোগ পেয়েছেন দক্ষিণখানের ফাতেমাতুজ জোহরা মহিলা মাদ্রাসার একজন শিক্ষক, ডেমরা ও গাজীপুরের দুই মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ দক্ষিণখানের মাদরাসাতুর রহমান আল আরাবিয়ায় প্রিন্সিপাল, অন্ধ বিভাগের শিক্ষক, দায়িত্বশীল ও ছয় শিক্ষার্থী। গত ২১ সেপ্টেম্বর সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে তারা পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব রওনা হয়েছেন।

ওমরাহ পালনকারীরা হলেন হাফেজ আলফাজ উদ্দীন, মো. সুরুজ জামান, মো. আরিফ মিয়া, মো. আবুল কালাম হাওলাদার, মো. গিয়াসউদ্দিন সোহাগ, মো. হৃদয় মিয়া, মুফতি বখতিয়ার হোসাইন, মো. আবু বকর সিদ্দিক, মো. মনির হোসেন, মো. ফজলে রাব্বী, মো. নজরুল ইসলাম, মো. তামজিদ হক বাবুল, মুফতি ফরিদউদ্দিন, মো. আ. মতিন ও মো. জুবায়ের হোসাইন।

ঢাকার দক্ষিণখানের মাদরাসাতুর রহমান আল আরাবিয়ায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিভাগে বর্তমানে ৯৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ জন ছাত্র ও ১৪ ছাত্রী। অন্ধ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে রয়েছে ছয়জন অন্ধ শিক্ষক।

শারজাহ চ্যারিটির ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ওমরাহ পালনের সুযোগ প্রসঙ্গে মাদরাসাতুর রহমান আল আরাবিয়ায় ভাইস-প্রিন্সিপাল ও এয়ারপোর্ট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আখতারুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গত রমজানের আন্তঃমাদ্রাসা বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের (দৃষ্টি প্রতিবন্ধী) নিয়ে হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতার অধিকাংশ বিজয়ী মাদরাসাতুর রহমানের ছাত্র। এই প্রতিষ্ঠানে ১০০ কাছাকাছি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের অন্তর চক্ষু খুলে দেওয়ার মেহনতের সঙ্গে যুক্ত আছি।

আমাদের এই কাজকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল (এসসিআই) বাংলাদেশ অফিস প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের ওমরাহপালনের ব্যবস্থা করেছে। আল্লাহ তাদের এই মহৎ কাজকে কবুল করুন, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন।’

মাওলানা আখতারুজ্জামান আরও বলেন, মাদরাসাতুর রহমান শিগগিরই বাকপ্রতিবন্ধী বিভাগ চালু করতে যাচ্ছে। এ জন্য শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরেকজন শিক্ষককে সৌদি আরবের তায়েফে ঈশারা ভাষা রপ্ত করার জন্য এক মাসের ট্রেনিং পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, আমার বধির ছাত্রদের উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা উপহার দিতে পারব।

উল্লেখ্য, শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল (এসসিআই) বাংলাদেশ অফিসের বিভিন্ন দুর্যোগ মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকে। এটি বাংলাদেশে নিবন্ধিত একটি বেসরকারি সেবা সংস্থা।